পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ২৫ জুন, ২০২২

তোমার পানে চেয়েছিলেম

তোমার পানে চেয়েছিলেম
             উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী

শিশির ভেজা শীতের ভোরে-
তোমায় আমি দেখেছিলেম।
উলের বোনা চাদর গায়ে,
বসেছিলে ঘাসের পরে।
দূর হতে বিভোর ভাবে
তোমার পানে চেয়েছিলেম।

বোশেখ মাসের তপ্ত দিনে-
তোমায় আবার দেখেছিলেম।
ছায়ার খোঁজে ছাতার নিচে
বসেছিলে বাসের তরে।
রোদ-চশমার আড়াল হতে
তোমার পানে চেয়েছিলেম।

শ্রাবনের সেই বাদল দিনে
তোমার দেখা পেয়েছিলেম।
বৃষ্টি-ভেজা তুমি তখন
ময়ূর পেখম মেলেছিলে।
তোমার নাচে মত্ত আমি
তোমার পানে চেয়েছিলেম।

সাদা ফুলে কাশের বনে-
তোমায় শেষ দেখেছিলেম।
হলুদ শাড়ি এলো চুলে-
কাত্যায়নী সাজে এলে,
অবুঝ মনে সেই শেষ
তোমার পানে চেয়েছিলেম।

সোমবার, ২০ জুন, ২০২২

একটু ভেবে দেখো

একটু ভেবে দেখো
         উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী

কেউ বলে ধর্ম যুদ্ধ,
কেউ বলে জিহাদ।
মানুষের রক্তে রাঙা
বক ধার্মিকদের হাত।

ধর্ম গ্রন্থ বিকৃত আজ-
মগজধোলাই কল,
'ধার্মিক'দের ষড়যন্ত্রে
বিশ্ব জোড়া কোলাহল।

গরুর মাংসে যায় জাত,
আর শুয়োরের মাংস হারাম।
মানুষের মাংস মানুষ খেলে
হয় ধর্মের খুব নাম।

মন্দির ভাঙো, মূর্তি ভাঙো
জিহাদ তাকেই বলে।
ধর্ম যুদ্ধে মরে 'আখলাক'
গরুর মাংস খেলে।

খালি পেটে মারো কিল
দাড়ি-টিকিদের কি দায়?
কেমনে ভরবে তোমার পেট
ওদের বয়েই যায়।

ধর্ম-ধর্ম-ধর্ম করো
ধর্মে কি ভরে পেট?
খাটলে তবে জুটবে ভাত
কেউ দেবে না ভেট।

হিন্দুর শত্রু মুসলিম আর
মুসলিমের শত্রু খ্রীষ্টান,
সবার শত্রু নাস্তিক গোটায়
বক ধার্মিকদের দোকান।

তোমায় যে ধর্ম শেখায়,
তোমায় ক্ষেপিয়ে তোলে-
তার সন্তান রাজপুত্র,
পড়ে বিদেশি ইস্কুলে।

দিওনা পা ওদের জালে,
ইতিহাস থেকে শেখো।
সভ্যতাকে বাঁচাতে তাই
একটু ভেবে দেখো।

বুধবার, ১৫ জুন, ২০২২

পুত্র দায়গ্রস্থ পিতা

পুত্র দায়গ্রস্থ পিতা
               উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী

শোনো তোমায় শোনাই আমি
এক ভীষণ মজার কথা,
একটি গাঁয়ে থাকেন এক
পুত্র দায়গ্রস্থ পিতা।
মেয়ের বাবা এলেন গাঁয়ে
পাকা কথা কইতে,
ছেলের চাকরি হলো কবে
চাইলেন তা জানতে।
ছেলের বাবার গর্ব ভীষণ
বলেন ছাতি মেলে,
"বছর চারেক হলো চাকরি-
হীরের টুকরো ছেলে।"
চমকে উঠে মেয়ের বাবা
বলেন, "দাঁড়ান মশাই,
এই চাকরি থাকবে কিনা
জানে শুধু সিবিআই।
ছেলের আপনার চাকরি যদি
বাম আমলে হতো
চোখ বুজে চারটি হাত-
এক করা যেত।"
ছেলের বাবার মাথায় পড়ল
আকাশ খানা ভেঙে,
বিয়ের বাজারে ছেলের মূল্য
গেছে এতো নেমে!
মূল্য তার নামতে নামতে
হয়েছে এখন শূণ্য,
ঘুষের চাকরি করেছে তার
পাপের ঘড়া পূর্ণ।
ধাক্কা ছিল ভীষণ জোরে,
জবাব দিয়েছে সময়-
গভীর শোকে ছেলের বাবা
চলে গেলেন কোমায়।

বুধবার, ৮ জুন, ২০২২

রোদ্দুর রায়

রোদ্দুর রায়
         উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী

হাত পেতে যে ঘুষ নিয়ে
বুক ফুলিয়ে বেড়ায় ঘুরে,
চোখটি বুজে, কানটি চেপে-
জেতাও ভোটে তোমরা তারে।

ঘৃণার বাণী ছড়ায় যারা-
দাঙ্গা লাগায় এক নিমিষে,
আইনসভার আসনগুলো
আলো করে তারাই বসে।

প্রতিবাদের নাম রোদ্দুর রায়
হয়তো সে প্রান্তিক।
বিদ্রোহের আগুন তারই বুকে-
জ্বলছে সদাই ধিক-ধিক। 

ভদ্র ভাষার প্রতিবাদ
রাষ্ট্র কানে তোলে না,
বধির এই রাষ্ট্রকে
ধাক্কা না দিলে জাগে না।

বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধি যখন
সরকারের ঘরে জমা,
রোদ্দুররা তখনই আসে,
কাউকে করেনা ক্ষমা।

ডাকাত নেতা পরলে ধরা
উডবার্নে নেয় আশ্রয়,
রোদ্দুররা হাসতে হাসতে
কারাগারে ঢুকে যায়।

প্রতিবাদের ঐ আগুন রেখো
তোমার ভিতর জ্বলে।
রোদ্দুর রায় তোমায় সেলাম-
রাষ্ট্রের ঘুম ভাঙিয়ে দিলে।

সৈনিক

সৈনিক           উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী   ছেলেটা গত কালই বাড়ি ফিরেছিল, ছ'মাস পর, মাঝে ছুটি পায়নি সে। ফুলসজ্জার পরের দিন চলে যেতে হয়েছ...