পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫

সৈনিক


সৈনিক
         উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী 

ছেলেটা গত কালই বাড়ি ফিরেছিল,
ছ'মাস পর, মাঝে ছুটি পায়নি সে।
ফুলসজ্জার পরের দিন চলে যেতে হয়েছিল!
ভাগ্যিস ভিডিও কল ছিল -
তাই চিনতে পেরেছিল বৌকে।
ভেবেছিল এবার ছুটিতে হানিমুনে যাবে,
সমুদ্রে, পাহারে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছে।
প্লান করেছিল বৌকে সারপ্রাইজ দেবে।
কিন্তু হায়! সে নিজেই আজ সারপ্রাইজড্!
ফোন এসেছে, সেনাছাউনিরতে ফিরতে হবে,
আজই ফিরতে হবে - যুদ্ধ লেগেছে।
বৌয়ের কপালে চুমু খেয়ে,
মায়ের পায়ের ধুলো নিয়ে পিছু‌ ফিরল।
তার মুখে হাসি, চোখে জল, মনে সংশয়
জানে না সে পরের বার ফিরবে হেঁটে -
নাকি কফিন-বন্দী হয়ে!

বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

গাজ়ার নিলাম

গাজ়ার নিলাম
                উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী 

মধ্যপ্রাচ্যে লাগল আগুন, দুনিয়া ছারখার!
যুদ্ধ-যুদ্ধ চলছে খেলা ইজরায়েল-আমেরিকার।
নেতানিয়াহু-ডোনাল্ড ট্রাম মিলিয়ে কাঁধে কাঁধ-
নিরিহ মানুষের রক্তে রাঙাল ওদের কালো হাত।
যেথায় দেখি ধ্বংসস্তূপ, কান্নার রোল কানে,
এরই উপর ট্রাম্প টাওয়ার চাইবে আকাশ পানে।
ভূমধ্যসাগর দেখ রক্তে ভেসে যায়!
'লাল' সাগরের সৈকতে ট্রাম্প রোদ পোহায়।
বাড়বে ব্যাবসা, ভরবে পকেট ডলার-ডলার-ডলার,
যার জমি সে যাক চুলোয়, ওদের বাড়বে পসার।
স্বপ্ন দেখে ডোনাল্ড ট্রাম্প সঙ্গি ইলন মাস্ক,
রঙ্গস্বামী, তুলসী আছে, আছে জেডি ভান্স।
ছিন্নভিন্ন শিশুর দেহ ছড়িয়ে যেথায় সেথায়,
পচা মাংসের কটূ গন্ধে বেঁচে থাকাই দায়।
রক্তে ভেজা গাজ়ার মাটি, আকাশে শকুন দল
পাথর ওরা, এসব দেখেও আসেনা চোখে জল।
হে ঈশ্বর তুমি কি আছো? দেখো চোখ মেলে-
তোমার কবে ভাঙবে ঘুম, কতো প্রাণ নিলে?

মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

'মহাকুম্ভে ম্যাসাকার'

'মহাকুম্ভে ম্যাসাকার'
                     উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী 

গঙ্গা তীরে লাশের মেলা কোভিড থেকে কুম্ভ,
তবুও মাটিতে পড়ে না পা এতই তার দম্ভ।
গঙ্গা তীরে মৃত্যু হলে হবে মোক্ষ লাভ!
ধুয়ে যাবে জনমে জনমে করেছ যত পাপ।
আত্মপক্ষ সমর্থনে এটাই করছে প্রচার,
মনুষত্বহীনতার করেছে সীমা পার।
নেতা-মন্ত্রী আর মিডিয়া বোঝায় জনে-জনে,
আবার কিছু ভন্ড সাধু জুটেছে ওদের সনে।
মুছল কত সিঁথির সিঁদুর, মায়ের কোল খালি-
শবের হিসেবে পরল চাপা, ঢাকল গঙ্গা-বালি!
নির্লজ্জ নেতাগুলো লাশও করল গুম-
স্বজনহারা মানুষ গুলোর কাড়ল রাতের ঘুম।
এক দল ভিআইপি, মূল্য তাদের খাস,
পরিচয় থেকেও কেউ বেওয়ারিশ লাশ।
এ লজ্জা তোমার-আমার, এ লজ্জা সবার,
ইতিহাসের থাকবে লেখা 'মহাকুম্ভে ম্যাসাকার'।

শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪

জাগো বাঙালি জাগো

জাগো বাঙালি জাগো 
        উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী 

পার্ক স্ট্রিটের সুজাটকে মনে পড়ে?
কিংবা কাটোয়া, কামদুনি, কাকদ্বীপ?
আর জি কর তো আজ‌ নতুন নয়,
তবু ভালো, তোমাদের ঘুম তো ভাঙল।

বাঙালি তো এমন নির্বিষ, নির্বিকার ছিল না!
নিশিথ সূর্যের দেশের রাজারাও-
বাঙালির রক্তচক্ষুকে ভয় পেত!
তবে এই শীত ঘুমের কারন কি?

তরুণী ডাক্তারের আর্তনাদ কি
বাঙালি কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙাতে পারল?
নাকি এই আর্তনাদ বন্ধ হলে আবার
ঘুমিয়ে পড়বে? - সময় জবাব দেবে।

আপাতত এই লড়াই জারি থাকুক,
আবার ঘুমিয়ে পড়ার আগে যেন-
তিলোত্তমার বিচার ছিনিয়ে আনতে পারি।
কি বাঙালি ঘুম পাচ্ছে? এবার তো জাগো!

বুধবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৪

তিলোত্তমা

তিলোত্তমা
         উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী

তিলোত্তমা, মা-বাবার একমাত্র সন্তান,
বড় আদরের মেয়ে-
কত আশা ছিল বড় হয়ে ডাক্তার হবে,
মানুষের সেবা করবে!
ডাক্তার হলো বটে কিন্তু-
মানুষের সেবা করার সুযোগ ওরা দিল না।
ওরা, মানে মানুষের মতো দেখতে একদল 'হায়না';
যারা মেয়েটাকে এক টুকরো মাংসের মতো ছিঁড়ে খেলো,
যাদের পাশবিক অত্যাচারে মেয়েটাকে-
এই গ্রহেই নরক দর্শন করতে হলো।
সরি, পাশবিক বললে পশুদের অপমান করা হয়-
কারণ, পশুরা কখনো ধর্ষণ করে না।
মানুষই কি এই গ্রহের সবচেয়ে হিংস্র প্রাণী?
আর কতোদিন 'তিলোত্তমা'রা অত্যাচারীতা হবে?
আর কবে সমাজ বদলাবে?
মানুষ আবার কবে মানুষ হবে?
মানুষের কাছে কি আছে এই প্রশ্নের জবাব?

রবিবার, ৫ মে, ২০২৪

বাঙালির ভোট পুজো

বাঙালির ভোট পুজো
            উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী 

দুর্গাপুজো, ঈদ পুজো,
বড়দিনের পুজোর সাথে
ভোট পুজোও করি পালন
কব্জি ভোর মাংস ভাতে।
বারো মাসে তেরো পাবণ,
ভোট একটা তারই মাঝে,
দেওয়াল লিখনে শুরু পুজো,
লাইনে দাঁড়াই সেজেগুজে।
মিটিং, মিছিল, রোড শো,
রব উঠেছে সাজো সাজো,
চায়ের দোকান, খেলার মাঠে
গরমাগরমি চলছে তক্কো।
কোন নেতা করছে চুরি,
কেই বা করে দাদাগিরি,
এবার ভোটে জিতবে কে,
ডুববে কার স্বপন-তরী।
'পুজো'র দিন এলো শেষে
সবাই ভীষণ উত্তেজিত,
সকাল সকাল দেবো ভোট-
ভাবটা ভীষণ গদগদ।
ভোটের বুথে লম্বা লাইন,
মাংস-দোকান যায়না কম,
উৎসবেতে মেতে সবাই,
পুজোর বাজার সরগরম।
খাওয়া-দাওয়া, গাল-গল্পে
ছুটির দিনটা কাটল বেশ,
ভোটের ফল বেরোলে তবেই
কাটবে এই পুজোর রেশ।

সৈনিক

সৈনিক           উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মচারী   ছেলেটা গত কালই বাড়ি ফিরেছিল, ছ'মাস পর, মাঝে ছুটি পায়নি সে। ফুলসজ্জার পরের দিন চলে যেতে হয়েছ...